পোস্টগুলি

জুন, ২০২২ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

প্রেমে পড়া❤️

ছবি
  হটাৎ ঘুম ভাঙতেই ফিসফিস শব্দ  শুনতে পেলাম।ছেলের ঘর থেকেই শব্দ আসছে মনে হল। ধীরে ধীরে দরজা খুলছি, দরজার ক্যাচ শব্দ পাওয়া মাত্রই ছেলে ঘুমের ভান করে পড়ে রইল।একদিন হাতেনাতে ধরব বলে রেডি হয়ে আছি ,সেদিন কোনো ফিসফাস  আওয়াজ নেই। মনে মনে ভাবলাম বাপ কা বেটা।ওর বাবাও তো এভাবেই রাত জেগে আমার সঙ্গে প্রেম করতো।ছেলে ফোনে প্রেমালাপ করছে, বাবা পত্রে প্রেমালাপ করেছে।কেবল স্থান কাল পাত্র আলাদা। পরদিন রাত্রে ছেলে জানালো ওর গ্রুপ স্টাডি আছে তাই ওর শুতে দেরি হবে। ছেলের দিকে তাকিয়ে নিজেদের যৌবনের ফ্ল্যাশব্যাকে ফিরেগেলাম।তখন কলেজে পড়ি।লুকিয়ে চুরিয়ে প্রেম করছি।বাবার কাছে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে মিথ্যে কথাবলে কতকিছু ম্যানেজ  করেছি।কলেজ ডুব দিয়ে সিনেমা দেখা,ময়দানে গিয়ে গড়ের মাঠে প্রেম করা। কি না করেছি!! আর এখন ছেলে করলেই আপত্তি!!!!!  ছেলেকেও খোলা আকাশে ডানা মেলতে দিলাম ।প্রথম যৌবনের নিষ্পাপ  ভালোবাসার আনন্দ  ভোগ করতে দিলাম ।বয়সের ধর্ম কে জোর করে দাবিয়ে  কোনও লাভ নেই । যা সহজাত, তাকে রোধ করা যায় না। ছেলেকে বললাম মন দিয়ে স্টাডি কর আর সময়মত শুয়ে পড়বে। নিজের ম...

বিকেলে ভোরের ফুল

ছবি
 বিকেলে ভোরের ফুল বিমানের পাইলট গৌরব আমার ওপর তলায় থাকে। একজন কমবয়সী ভদ্র লোক ।কেবিন ব্যাগ নিয়ে প্রায়ই বিমানবন্দরের দিকে যেতে দেখি।সুদর্শন, সুঠাম চেহারার হাসিমুখ যুবকের সঙ্গে বাড়ির লিফ্টে উঠতে গিয়ে অনেকবার দেখা হয়েছে।হাই ,হেলো  সুপ্রভাত জানানো ব্যাস এটুকুই কথা হয়। দিল্লীর এয়ারপোর্ট  অঞ্চলে থাকার জন্য আমাদের ফ্লাটে প্রচুর  পাইলট,এয়ারহোস্টেস ভাড়া থাকতো। একবার বিমান ধরতে এয়ারপোর্ট যাচ্ছি হঠাৎই সেই পাইলটের সাথে দেখা  একথা সেকথার পর একদিন বাড়িতে চা পানের নিমন্ত্রণ জানাই। ঠিক দিন দুয়েক বাদে হাতে ফুলের বুখে নিয়ে গৌরব আমার ফ্ল্যাটে হাজির।মনে হল  ঘরেএকটা সুন্দর  টাটকা বাতাস বয়ে এলো।মন খুশিতে ডগমগ করে উঠল।  বহুদিন পর এমন ভালোলাগার মুহূর্ত খুঁজে পেলাম।  মেয়ে চাকরিসুত্রে বিদেশে থাকে দেশে আমি একা!! জীবনের এক বিশেষ সন্ধিক্ষণে দাড়িয়ে আমি সঙ্গী খুঁজছিলাম। বয়স কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পাইলটের সঙ্গ বেশ উপভোগ্য মনে হল।এরপর থেকে প্রায়  প্রতিদিনই আমরা ডিনারে বাইরে যেতাম। পড়ন্ত বেলায়  এসে জীবন কে নতুন করে চিনছিলাম।সুন্দর মুহূর্ত গুলো উ...

রানুর বিয়ে

 ছিমছাম চেহারার হাসিমুখ মেয়েটির বিয়ে।ঘরে এখন সাজো সাজো রব।বাড়ির বড়রা সবাই ব্যস্ত। আত্মীয় অতিথিদের কোথায় রাখা হবে,খাবারের মেনু কি হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনার শেষ  নেই।রানুর মা ও রানুর বিয়ের  গয়নাগাটি শাড়ি কাপড় কেনা নিয়ে ব্যস্ত। ওদিকে রানুর মুখে হাসি নেই।  ওর একটাই  চিন্তা নতুন পরিবেশে নতুন জায়গাতে ও মানিয়ে নিতে পারবে তো?ছেলের বাড়ির  সকলেই খুব ভালো মানুষ ,আর রানুর বর!!! সে তো রানুকে পছন্দ করে ,ভালোবাসে ।তবুও রানুর মনে একটা খটকা লেগেই থাকে। ঘোষ পরিবারের বড় মেয়ে বানি বিয়ের পর থেকেই বাপের বাড়িতে থাকে।বড় আদুরে মেয়ে,একটু মেজাজি।বড্ড রাগি।শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেনি।স্বামীর সঙ্গে থাকতে নারাজ তাই এখানে থাকে।রানুর বিয়ের ঠিক হবার পর বানি বলেছিল বুঝলি বোন* মতের মিল না হলে শ্বশুরবাড়িতে না থাকাই ভাল *। মা বলে ,নতুন পরিবেশে নতুন মানুষজনদের চিনতে জানতে কিছু সময় লাগে।ভালোবাসা পেতে গেলে ভালোবাসতে  জানতে হয়।আমিও তো এক বাড়ি থেকে এসে এ বাড়িকে আপন করে নিয়েছি।হ্যাঁ, কিছু সময় লাগে নতুন পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে ।তারপর ধীরে ধী...

ক্ষণিকের স্বস্তি

ছবি
 কবিতা: ক্ষণিকের স্বস্তি গ্রীষ্মের দাবদহে প্রকৃতি যখন তপ্ত, নদ নদী শুকিয়ে কাঠ, জলের  আশায় পক্ষিকুল ক্লান্ত, তখন তুমি করুণাধারায় এসো। সারাদিন ঝরো তুমি অঝোর ঝরে! স্নিগ্ধ  হবে বন্য প্রাণী, সিক্ত হব আমি, সিক্ত হবে ধরিত্রী, আর হাসবেন অন্তর্যামী! খিলখিলিয়ে হাসবে কলি, অঙ্কুরিত শস্য গুলি, শান্ত হবে এই পৃথিবী বারির পরশ পেয়ে। এক পশলা বৃষ্টি শেষে, রামধনু রঙ উঠবে হেসে। মেঘ সরিয়ে উঠবে রবি সাত রঙা  রঙ রাঙাতে। আকাশ পানে চেয়ে রব কালবোশেখীর দোলাতে। সোমা গাঙ্গুলী

প্রিয় গ্রীষ্ম

ছবি
  প্রিয় গ্রীষ্ম গরমকালে তো গরম লাগাটাই স্বাভাবিক তাই না।তবুও আমরা কি  গ--র--ম,কি  গ--র---ম করি। অথচ দিব্যি কুল আছে পাড়ার চাঁদু।মোড়ের মাথায় চপ জিলিপির দোকানে সারাদিন গাধার খাটলি খেটে রাত্রিবেলা খোলা আকাশের নিচে ঘুমোচ্ছে।  সদা হাস্যময় চাঁদু দোকানে আসার পর থেকেই  দোকান যেন আর ও রমরমিয়ে  চলছে। এই গরমে নিজেকে এত কুল রাখো কি করে জিজ্ঞেস করলে চাঁদুর সহজ উত্তর, বেশি ভাবি না,সব সময়ই যদি বলি খুব গরম,খুব গরম তবে গরম কি কমবে?উল্টে  কষ্ট আরও বাড়বে। আমার তো মাথার উপর ছাদ নেই।তোমাদের মত ঠান্ডা ঘরও নেই অগত্যা গাছ তলার  ঠান্ডা হাওয়া। ভোর বেলা কোকিলের ডাকে ঘুম ভাঙে।দারুন লাগে।সক্কাল সক্কাল চান করে দোকানের কাজে নেমে পড়ি।কোথায় গরম!!!!!     ওসব তোমরা ভাব। চাঁদুর ঠান্ডা মাথায় কুল কুল ভাব দেখে গ্রীষ্মের গরম গরম বলা রোগ নিমেষে উধাও হয়ে যায়। গরমে বিন্দাস আছি। গরমকাল জিন্দাবাদ। সোমা গাঙ্গুলী

নিঃসঙ্গ জীবন

ছবি
 নিঃসঙ্গ জীবন  বিশাল বাড়ির এক কোণে  খাটে বুড়ো বুড়ির ঠিকানা।নিঃসঙ্গ একাকীত্ব জীবন। পাড়াপড়শিরা খোঁজ নিয়ে যায়।প্রয়োজনে আসে ,কথা বলে চলে যায়।কাজের লোকের উপরই নির্ভরশীল। তারা খাবার খাইয়ে দেয়,ওষুধ দেয় ,বাথরুমে নিয়ে যায়,হুইল চেয়ারে এঘর ওঘর করে।কোনও কিছুর ত্রুটি রাখে না। মানুষগুলোর অর্থের অভাব নেই, সেবার অভাব নেই-----    অভাব শুধু মনের শান্তির। ঘোলাটে চোখ নোনা জলে ভিজে যায়। চলচ্ছক্তিহীন দুটি  প্রাণ সন্তানদের  দেখার আশায় বুক বেঁধে থাকে।  কখন সন্তানেরা তাদের কাছে আসবে,তাদের দেখবে এই আশাতেই তাদের দিন চলে যায়। কখনও কখনও সন্তানের দেওয়া মিথ্যা প্রতিশ্রুতি নিয়েই বেঁচে থাকে। সন্তানদের নানান অজুহাত।  তারা ভারি ব্যাস্ত। তারা মস্ত মানুষ। বাবা মা কে দেখার তাদের সময় নেই।  নিঃসঙ্গ একাকী জীবন বড় কষ্টের। বড় দুঃখের । সব থেকেও তাদের কিছুই নেই। বৃদ্ধ বয়সে মানুষ খুব অসহায় হয়ে ওঠে।এই অসহায়তার সুযোগ নেয় তারই সন্তান।