রোজগেরে বৌমা💁‍♀️




আমি অনেক স্বপ্ন 🥰 নিয়ে আমার শ্বশুরবাড়ি এসেছিলাম। বিয়ের কয়েক মাস পরেই  আমি একটি স্কুলে চাকরির  দরখাস্ত  করি। চাকরি  করব এটা  আমার বরাবরের একটা স্বপ্ন ছিল। বিয়ের আগে পূর্ণ হয় নি,  তাই  শ্বশুরবাড়ি এসে চাকরির চেষ্টা করি। চাকরির কথা শুনেই আমার শাশুড়ি মা এককথায় নাকচ করে দেয়, "ঘরের বউ চাকরি করলে চলে, সংসারের কাজ কে সামলাবে? চাকরি করতে হবে না " ইত্যাদি নানান কথা! 😔 আমি  তো হতবাক হয়ে গেলাম। মনের কষ্ট মনেই চেপে  রেখে  দিলাম। রাতের বেলা রোজ বিছানায় শুয়ে কাঁদতাম😪। স্বামী কে মনের কথা বলতাম কিন্তু "অপ্রয়োজনীয়  কথা" বলে উনি বিশেষ পাত্তা  দিতেন না।

বাচ্চা যখন  ছোট ছিল তখন বাচ্চার দেখভালের অজুহাত দেখিয়ে আমাকে চাকরি করার কোন সুযোগ দেওয়া হয় নি। মেয়ে যখন বড় হলো, তখন আমি ঘরেই  টিউশন করতে  শুরু করি📚📖। টিউশন করার জন্য অবশ্য শাশুড়ি-মার কোন  আপত্তি  ছিল না। উনি বরং খুশি-ই হতেন। নিজে বিশেষ  লেখাপড়া জানতেন না বলে আফসোস করতেন। তাই আমি ওনাকে  লিখতে, বই  পড়তে শিখিয়ে দেব এই আশ্বাস দি। দুপুর বেলায় সকলে যখন বিশ্রাম  নিত আমি তখন ওনাকে লেখাপড়া শেখাতাম🖋। ধীরে ধীরে উনি গল্পের বই পড়ার অভ্যাস করেন। কিছুটা  হলেও  আমি আমার রোজগার দিয়ে সংসারে সাহায্য করি। 💕

শাশুড়ি মা ও  এখন বলেন,"আমার রোজগেরে বৌমা! 😇 তখন তোমায় চাকরি করতে না দিয়ে আমি খুব ভুল  করেছি"। আমি বাজারে এলেই ওনার জন্য  গল্পের বই কিনে  আনি। তারাতারি ঘরের কাজ কর্ম সেরে আমি টিউশন ক্লাস  করি, আর উনিও গল্পের বই নিয়ে বসেন। এখন আর আমাদের মধ্যে কোন মান অভিমান নেই। আমিও খুশি আর  উনিও। আমরা মেয়েরা যদি পরস্পর কে না বুঝি, তাহলে সংসার সুখের হবে কি করে? কথায় বলে,"সংসার  সুখের  হয় রমণীর গুণে"।🤗


সোমা গাঙ্গুলী

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

উরো চিঠি 💌

চুসি পিঠে

মোচার ডালনা