গ্রীষ্মের ছুটি

 গ্রীষ্মের ছুটি


স্কুলের গরমের ছুটি পড়তো  মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে। গরম পড়লেই আমরা স্কুলের ছুটির অপেক্ষায় থাকতাম কারণ একটাই,মামাবাড়ি যাওয়া!!!!


গরমের ছুটিতে মামাবাড়ি যাওয়ার মজাই আলাদা।যেই না স্কুল ছুটি হল আমরা মামাবাড়ি  চলে আসতাম।খুব মজা হত।লেখাপড়ার ঝামেলা নেই, শুধু টি ভি তে কার্টুন দেখো ,সারাদিন টো টো করে ঘুরে বেড়াও কেউ কিছুটি বলবে না।


মামাতো  মাসতুতো ভাই বোন মিলিয়ে চারজন একসাথে জুটি বাঁধতাম ।যখন ছোট ছিলাম তখন দিদার রান্নাঘর থেকে নুন হলুদ নিয়ে খেলনাবাটি খেলতাম।দুপুর বেলা সবাই যখন বিশ্রাম নিত আমরা ভাই বোনেরা মিলে বয়াম থেকে লুকিয়ে আচার বার করে খেতাম।


বাগানের পেয়ারা গাছে চেপে বসে থাকতাম। আম গাছে একটি আম ও পাকার জন্য রাখতাম না ।আম পেড়ে সেগুলো হামাম দস্তা তে ছেঁচে আগে থেকে চুরি করে রাখা নুন লঙকা মেখে ভাগ করে খেতাম।

কতবার ধরা পড়ে বকুনিও খেয়েছি।কাঁচা আম ছেঁচকি খেয়ে পেটে ব্যথা হলে মামাদের আদরমাখা বকুনিও খেয়েছি।


একটু বিকেল হলেই আইসক্রিম ওয়ালার টুং  টুং শব্দে ছুটে গিয়ে

কাঠি দেওয়া চুড়া আইসক্রিম, মালাই আইসক্রিম  খেয়েছি।

সবাই মিলে হই হই করে গরমের ছুটি উপভোগ করতাম। তখন না লাগতো গরম না করতাম  হাঁসফাঁস।নির্বিকার চিত্তে খেতাম আর ঘুরে বেড়াতাম।


 এখন বড় হওয়ার পর মামাবাড়ি যাই ঠিকই।ভাইবোনেদের সাথে আনন্দ ও করি ,কিন্ত ছোটবেলার সেই মজা আনন্দ  খুনসুটি আর হয় না । সেই মুহূর্ত গুলো খুব মিস করি।ভালো সময় খুব দ্রুত পেরিয়ে যায়।

এখনও মামাবাড়ির সেই পেয়ারা গাছ,আম গাছ সবই আছে । যে বকুল তলায় আমাদের  সংসার পাতা ছিল সেটাও আছে শুধু চরিত্র গুলো পাল্টে গেছে।

এখন বাচ্চাদের যখন দেখি তখন আমি আমার ফেলে আসা ছোটবেলাকে দেখতে পাই। 


মনে মনে ভাবি ,আবার আমি ছোটো হয়ে সেই ছোট বেলায় ফিরে যাই,গরমের ছুটির অপেক্ষায় থাকি আর সেই অনাবিল আনন্দের মুহূর্ত গুলোকে যেতে নাহি দিব বলে আঁকড়ে ধরে রাখি।


      সোমা গাঙ্গুলী


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

উরো চিঠি 💌

চুসি পিঠে

মোচার ডালনা